- Joined
- Jul 31, 2024
- Messages
- 102
- Reaction score
- 3
কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির ভুলত্রুটি সংকলন করে বই প্রকাশ করা কি সালাফদের মানহাজ?
কেউ একজন, আমাদের সম্মানিত শাইখ জারাহ ওয়া তা’দিল এর ঝান্ডা ধারণকারী ইমাম আল-আল্লামা রাবী বিন হাদী উমাইর আল মাদখালী (হাফিয্বাহুল্লাহ’কে) জিজ্ঞাসা করেছিলোঃ কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির ভুলত্রুটি সংকলন করে বই প্রকাশ করা কি সালাফদের মানহাজ? কেউ কেউ বলে থাকেন এটি জায়েজ নয়।সুবহান’আল্লাহ! পথভ্রষ্ট লোকেরা ‘নিজেদের ভ্রষ্টতাকে আড়াল করে রাখার জন্য এই ধরণের কথা বলে থাকে যে - সালাফগণ কারো ভুলত্রুটি সংকলন করতে না’। প্রকৃতপক্ষে, আল্লাহ এবং তাঁর রসূল উভয়েই গোমরাহীদের ভ্রষ্টতার কথা উল্লেখ করেছেন...আল্লাহ তা’আলা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের কথা উল্লেখ করেছেন এবং তিনি কুর’আনের অনেক আয়াতে তাদের তিরস্কার করেছেন। যেমনঃ
لُعِنَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنۢ بَنِىٓ إِسْرٰٓءِيلَ عَلٰى لِسَانِ دَاوُۥدَ وَعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ ۚ ذٰلِكَ بِمَا عَصَوا وَّكَانُوا يَعْتَدُونَ - كَانُوا لَا يَتَنَاهَوْنَ عَن مُّنكَرٍ فَعَلُوهُ ۚ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ
বনী ইসরাঈলের মধ্যে যারা কুফরী করেছিল তারা দাঊদ ও মারইয়ামের ছেলে কর্তৃক অভিশপ্ত হয়েছিল- এটা এজন্য যে, তারা ছিল অবাধ্য ও সীমালংঘনকারী। তারা যেসব গর্হিত কাজ করত তা হতে তারা একে অন্যকে বারণ করত না। তারা যা করত তা কতই না নিকৃষ্ট। [আল মা’য়িদাহঃ ৭৮-৭৯]
مَثَلُ الَّذِينَ حُمِّلُوا التَّوْرٰىةَ ثُمَّ لَمْ يَحْمِلُوهَا كَمَثَلِ الْحِمَارِ يَحْمِلُ أَسْفَارًۢا ۚ بِئْسَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِـَٔايٰتِ اللَّهِ ۚ وَاللَّهُ لَا يَهْدِى الْقَوْمَ الظّٰلِمِينَ
যাদের ওপর তাওরাতের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়েছিল, অতঃপর তা তারা বহন করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত কিতাবসমূহ বহনকারী গাধার ন্যায়। কত নিকৃষ্ট সেই সম্প্রদায়ের দৃষ্টান্ত যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।[আল জুমু’আহঃ ৫]
قُلْ هَلْ أُنَبِّئُكُم بِشَرٍّ مِّن ذٰلِكَ مَثُوبَةً عِندَ اللَّهِ ۚ مَن لَّعَنَهُ اللَّهُ وَغَضِبَ عَلَيْهِ وَجَعَلَ مِنْهُمُ الْقِرَدَةَ وَالْخَنَازِيرَ وَعَبَدَ الطّٰغُوتَ ۚ أُولٰٓئِكَ شَرٌّ مَّكَانًا وَأَضَلُّ عَن سَوَآءِ السَّبِيلِ
বল: ‘আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়ে নিকৃষ্ট পরিণামের সংবাদ দেব যা আল্লাহর নিকট আছে? যাকে আল্লাহ লা‘নত করেছেন, যার ওপর তিনি রাগান্বিত, যাদের কতককে তিনি বানর ও কতককে শূকর করেছেন এবং যারা তাগূতের ইবাদত করেছে মর্যাদায় তারাই নিকৃষ্ট এবং সরল পথ হতে সর্বাধিক বিচ্যুত। [আল মা’য়িদাহঃ ৬০]
আল ফিরকাতুন নাজিয়া আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল-জামাআহ, আমাদের ইতিহাসের সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত, জাহম বিন সাফওয়ান এবং বিশর আল-মারিসি সম্পর্কে লিখে গেছেন এবং তারা(সালাফরা) তাদের(বিদ’আতীদের) ভ্রষ্টতা ও ভুলগুলি উল্লেখ করেছেন এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভ্রান্ত আক্বীদাহ সংকলন করে গেছেন এই উম্মতকে সতর্ক করার জন্যে। আহলুস সুন্নাহর শ্রেষ্ট ইমাম, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল তার আল-রাদ্দু আল-জাহমিয়া’র মধ্যে জাহম ইবনে সাফওয়ানের ভ্রান্ত আক্বীদাহ’র রদ্দ করেছেন, এমকি তিনি বিশর আল-মারিসি’র খন্ডনে বই লিখেছেন। তাহলে কে এটাকে(ভ্রষ্টদের ভুল সংকলন’কে) নাজায়েজ করল? প্রকৃতপক্ষে, এটি বাধ্যতামূলক। যদি আপনি মনে করেন যে, কোনো ভ্রষ্টের অসংখ্য বিদ’আত দ্বারা মানুষ বিভ্রান্ত হবে তাহলে আপনার উচিৎ তার ভুলগুলোকে সংকলন করা এবং যথাসাধ্য খন্ডন করা, যদি এরূপ আপনি করে থাকেন তাহলে জেনে রাখুন আপনি ইসলাম ও মুসলিমদের জন্যে এক বিশাল কল্যানের কাজ করেছেন। আল্লাহ আপনাকে জাযায়ে খায়ের দান করুক।
- শাইখ রাবী’র মন্তব্য এখানেই শেষ হয়।
আমাদের শায়খ মুকবিল বিন হাদি আল-ওয়াদি'ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ "মুসলমানদের একটি মূলনীতি হলো তারা একে অপরকে সম্মান করবে, তবে, যদি কেই এমন কাজ করে যা ধর্মীয় ভাবে বাতিল তাহলে সে ব্যাক্তি তার সম্মানের হক্ব হারিয়ে ফেলে। তখন মুসলমানদের উপর কর্তব্য হলো তার অবস্থা স্পষ্ট করা যাতে কেউ তার দ্বারা প্রতারিত না হয়।" ফাদ্বা’ই ওয়া নাসা’ইহ পৃষ্ঠাঃ ৪১ ।
জয়নাল বিন তোফাজ্জল
ইসলামিক স্টাডিস (বিভাগ), দনিয়া ইউনিভার্সিটি ঢাকা
ইসলামিক স্টাডিস (বিভাগ), দনিয়া ইউনিভার্সিটি ঢাকা