Welcome!

By registering with us, you'll be able to discuss, share and private message with other members of our community.

SignUp Now!
Headlines
No news have been created yet.

আহলুল বিদআতের কাছ থেকে শ্রবণ ও তাদের সাথে তর্ক-বিতর্ক করার ব্যাপারে সালাফগণের অবস্থান ।

Admin
Author

Admin

Administrator
Staff member
Joined
Jul 31, 2024
Messages
102
Reaction score
3

আহলুল বিদআতের কাছ থেকে শ্রবণ ও তাদের সাথে তর্ক-বিতর্ক করার ব্যাপারে সালাফগণের অবস্থান ।​

মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَإِذَا رَأَيْتَ الَّذِينَ يَخُوضُونَ فِي آيَاتِنَا فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ …​
আর আপনি যখন তাদেরকে দেখেন, যারা আমাদের আয়াতসমূহ সম্বদ্ধে উপহাসমূলক আলোচনায় মগ্ন হয় , তখন আপনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন… ( আনআমঃ ৬৮ )
ইমাম আত-তাবারী (রাহিমাহুল্লাহ) তার তাফসীরে (৫/৩৩০) বলেছেন: “এই আয়াতটি একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ যে, তা যেকোনো বিদআতকারীই হোক না কেন, প্রত্যেক মিথ্যাবাদী বা প্রকাশ্য পাপী, ও আহলুল-বাতিলদের সাথে বসা নিষেধ যতক্ষন তারা তাদের মিথ্যা কথা বলতে থাকে।”

ইবনে আব্বাস ( রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহু ) বলেছেন: “আহলুল হাওয়া তথা প্রবৃত্তি পূজারী লোকদের সাথে বসো না, কেননা তাদের সংস্পর্শ অন্তরের রোগের কারণ।”

👉


আহলুস সুন্নাহর ইমাম আবু আব্দুল্লাহ আহমাদ ইবন মুহাম্মাদ ইবন হাম্বল ( রাহিমাহুল্লাহ ) তার মূল কিতাব উসূলুস সুন্নাহতে বলেছেনঃ "[আমাদের কাছে সুন্নাতের ভিত্তি হল] বিতর্ক পরিত্যাগ করা, এবং প্রবৃত্তি পূজারী লোকদের সাথে বসা থেকে বিরত থাকা - এবং দ্বীনের মধ্যে ঝগড়া, তর্ক এবং বিবাদ পরিত্যাগ করা।"

আশ-শাইখ আল-আল্লামা উবাইদ ইবনে আব্দুল্লাহ আল-জাবিরি (হাফিয্বাহুল্লাহ) উসূলুস সুন্নাহর ব্যাখ্যায় বলেছেন: বিবাদে জড়িয়ে পড়া বা তর্ক-বিতর্ক সবই এখানে একই অর্থে ব্যাবহৃত হয়েছে —এবং এই তর্ক/বিতর্ক দুই ধরনের:

  • ➤ প্রথমটি হল প্রমাণ সহ সত্যের স্পষ্টীকরণ:
যেমনঃ “বিদআতীদের বলা - এটিই সুন্নাহ, এই হলো প্রমাণ - আর এটিই বাতিল এবং এই হল তার দলিল” । এই পদ্ধতি প্রশংসনীয় এবং এই পদ্ধতিতে সালাফরা মু'তাযিলা, বা আশারিয়্যাহ, কিংবা তাদের পূর্বে জাহমিয়া, বা খাওয়ারিজদের সাথে তারা বিতর্কে লিপ্ত হতেন।
  • ➤ দ্বিতীয় প্রকারটি হলোঃ এরকম যেখানে বাহাসে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি ব্যাক্তি তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে তার মতের প্রতি নতজানু করতে চায় ।
আর সুন্নাহের লোকেরা এরকম করেনা এবং সালাফরাও এটি পরিহার করেছেন। তারা এটির সমালোচনা করেছেন, তারা এটিকে ঘৃণা করতেন এবং যারা এতে জড়িত তাদেরকে তারা কঠোরভাবে তিরস্কার করতেন।

সালাফগণ তখনই বাহাসে লিপ্ত হতেন যখন দেখতেন ব্যাক্তি হক্ব অন্বেষ করছে , আর তিনারা সেই সব মজলিশ পরিত্যাগ করতে যখন দেখতেন ব্যাক্তি একজন প্রবৃত্তি পূজারী - হক্ব প্রত্যাখ্যানকারী এবং নিজেকে জাহির করার জন্যে বিতর্ক করতে চায় । - আর একারণেই ইমাম আহমাদ এত জোর দিয়েছিলেন আহলুল হাওয়াদের সাথে বসা পরিত্যাগ করার জন্যে এবং দ্বীন নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ পরিত্যাগ করার জন্য ।
আর এ কারণে, একজন সালাফ বলেছেন: "যে ব্যক্তি তার দ্বীনকে বিতর্কের জন্য উন্মুক্ত করবে [তার আক্বীদা(ঈমান)] ওঠানামা করবে (তথাঃ হয় নিজে ভ্রষ্ট হবে নাহয় ভ্রষ্ট ব্যাক্তি হক্ব গ্রহণ করবে)।"

সালাফরা সবসময় আহলুল হাওয়া তথা প্রবৃত্তি পূজারী ব্যক্তিদের সাথে বিবাদে লিপ্ত হওয়া এবং তাদের সাথে তর্ক-বিতর্ক করা থেকে সতর্ক করেছেন, যা ইবনে বাত্তাহ আল-উকবারী আল-ইবানাহ আল-কুবরা গ্রন্থে আইয়ুব আস-সাখতিয়ানী থেকে বর্ণনা করেছেন। (মৃত্যুঃ ১৩১হিজরি)
“আবু কিলাবা আমাকে বললেন, ‘হে আইয়ুব! আমার কাছ থেকে চারটি বিষয় মুখস্থ করে নাও:

  • (১) নিজের মতো করে কুরআন সম্পর্কে কথা বলবে না,
  • (২) আল্লাহর হুকুমের ব্যাপারে সতর্ক থাকো,
  • (৩) যদি সাহাবায়ে কেরামের কথা উল্লেখ করা হয় তাহলে চুপ হয়ে যাও।
  • (৪) এবং আহলুল হাওয়াদের কাজে ও কথায় কান দেবে না।"

আহলুল বিদ'আহদের থেকে দূরে থাকার ব্যাপারটা হাদিস দ্বারাও সাব্যস্ত বটে যা রয়েছে সহীহ মুসলিমের ভূমিকায় এবং ইমাম আল-বাগাভীর শরহে সুন্নাহ কিতাবে,আবু হুরায়রা (রাদ্বিআল্লাহু আনহু) বলেন (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:

"আমার উম্মতের শেষ দিকে এমন কিছু লোক আবির্ভূত হবে যারা তোমাদের কাছে এমন কিছু বর্ণনা করবে যা তোমরা বা তোমাদের পূর্বপুরুষরাও কোনোদিন শোনেনি, সুতরাং তাদের থেকে সাবধান হও এবং তাদের থেকে দূরে থাকো।"
আল্লাহ তা’আলা বলেন,

هُوَ الَّذِىٓ أَنزَلَ عَلَيْكَ الْكِتٰبَ مِنْهُ ءَايٰتٌ مُّحْكَمٰتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتٰبِ وَأُخَرُ مُتَشٰبِهٰتٌ ۖ فَأَمَّا الَّذِينَ فِى قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشٰبَهَ مِنْهُ ابْتِغَآءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَآءَ تَأْوِيلِهِۦ ۗ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُۥٓ إِلَّا اللَّهُ ۗ وَالرّٰسِخُونَ فِى الْعِلْمِ يَقُولُونَ ءَامَنَّا بِهِۦ كُلٌّ مِّنْ عِندِ رَبِّنَا ۗ وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّآ أُولُوا الْأَلْبٰبِ​

তিনিই আপনার প্রতি এই কিতাব নাযিল করেছেন যার কিছু আয়াত ‘মুহ্‌কাম’, এগুলো কিতাবের মূল; আর অন্যগুলো ‘মুতাশাবিহ্‌’ , সুতরাং যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে শুধু তারাই ফেৎনা এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে মুতাশাবিহাতের অনুসরণ করে । অথচ আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর তারা বলে, ‘আমরা এগুলোতে ঈমান রাখি, সবই আমাদের রবের কাছ থেকে এসেছে’ ; এবং জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা ছাড়া আর কেউ উপদেশ গ্রহণ করে না। (সূরাঃ আলে-ইমরান - ৭)

আহলুল বিদ‘আহ ওয়াল হাওয়াকে পরিত্যাগ করা ছিল সালাফদের মানহাজ। সাবিত বিন আজলা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ
আমি আনাস বিন মালিক, সাঈদ বিন আল-মুসাইয়িব (মৃত্যু ৯৪ হি), আল-হাসান আল-বসরি (মৃত্যু ১১০ হি), সাঈদ বিন জুবায়ের (মৃত্যু ৯৫ হি), ইব্রাহিম আন-নাখায়ী (মৃত্যু: ৯৫ হি), 'আতা বিন আবি রাবাহ (মৃত্যু ১১৪ হি), তাউস বিন কায়সান (মৃত্যু ১০৬হি), মুজাহিদ (মৃত্যু ১০৪ হি), আবদুল্লাহ বিন আবি মুলাইকা (মৃত্যু ১১৭ হি), আজ-জুহরি বিন শিহাব (মৃত্যু. ১২৪ হি), মাক-হুল আশ-শামি (মৃত্যু ১১২ হি), আল-কাসিম আবু আবদির-রহমান, 'আতা আল-খুরাসানি (মৃত্যু ১৩৫ হি), সাবিত আল-বুনানি (মৃত্যু ১২০ হি), আল-হাকাম বিন 'উতাইবা , আইয়ুব আস-সাখতিয়ানি (মৃত্যু ১৩১ হি), হাম্মাদ, মুহাম্মাদ বিন সিরিন (মৃত্যু ১১০ হি) এর সাথে দেখা করেছি ও আবু 'আমীর এবং তিনি আবু বকর আস-সিদ্দিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু), ইয়াজিদ আর-রিকাশী (মৃত্যু ১১৯ হি) এর সাথে দেখা করেছিলেন। সুলায়মান বিন মুসা। তারা সবাই আমাকে জামাআতের সাথে লেগে থাকার নির্দেশ দিয়েছে এবং তারা সবাই আমাকে বিপথগামী আহলুল বিদআহর লোকদের থেকে সাবধান করেছেন।"


শারহু উসূলুস সুন্নাহ ]
জয়নাল বিন তোফাজ্জল
ইসলামিক স্টাডিস (বিভাগ), দনিয়া ইউনিভার্সিটি ঢাকা​
 
Back
Top