আমিন প্রসঙ্গে মিথ্যাচারের জবাব - PDF ব্রাদার রাহুল হুসাইন

No permission to download
আমিন প্রসঙ্গে মিথ্যাচারের জবাব - PDF
Author
ব্রাদার রাহুল হুসাইন
Publisher
দারুল ক্বারার পাবলিকেশন
মুফতী বশীর হাসান কাসেমী সাহেবের ‘পবিত্র কুরআন এবং বিশুধ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হানাফীদের নামাজ়’, মুফতী শামসুর রহমান কাসেমী সাহেবের ‘হাদীস আহলে হাদীস ও হানাফী মাযহাব’, ‘দালায়েলুল মুকাল্লিদিন’ বইয়ের জবাব“ ‘হানাফীদের নামাজ ৯৩ পৃঃ, ‘হাদীস আহলে হাদীস ও হানাফী মাযহাব ৮২ পৃঃ, দালায়েলুল মুকাল্লিদিন ১/৪০ পৃষ্ঠার ৭ নং দলীল-
প্রথম দলিল
(ক)ادْعُوا رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ তোমার স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে ও সংগোপনে (সুরা আরাফ ৭/৫৫)।
(খ) যখন সে ডাকলো তার প্রতিপালককে অনুচ্চস্বরে (সুরা মরিয়ম ১৯/৩)
(গ) আতা বলেন, “আমীন দুয়া” (বুখারী বাব ১১১)

কাসেমী সাহেবের মন্তব্যঃ- আমীন শব্দটি দুআ। দুআর ব্যাপারে আল্লাহ (সুব) মূলনীতি বলে দিয়েছেন যে দুআ অনুচ্চস্বরে বলা উত্তম। তাই ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন যে, ইমাম মুক্তাদী সকলের জন্য আমীন অনুচ্চস্বরেই বলা উত্তম (হানাফীদের নামাজ, ৯৩ পৃষ্ঠা)।

জবাব :-“মাসআলা যখন মাযহাবীদের মতের বিপক্ষে যায় তখন বশীর হাসান কাসেমী সাহেব এবং শামসুর রহমান কাসেমী সাহেবর মত মাযহাবী নামধারী মুফতী সাহেবরা মাসালাটি তাদের পক্ষে আনার জন্য হয় ইবারতের (হাদীসের) কিছু অংশ টেনে আনবে, নতুবা শব্দ পরিবর্তন করবে, নতুবা শব্দ উলটো পালটা করবে, অক্ষর আমদানী করবে, না হয় অক্ষর কমিয়ে দেবে।”

“প্রথম জবাবঃ-হানাফী মাযহাবী মুকাল্লিদের কাছে কুরআন ও হাদীস থেকে মযবুত দলীল নেই যে, আমীন দুআ। কাসেমী সাহেব যে দলীল পেশ করেছেন সেটা হযরত আতা তাবেয়ীর কথা আমীন দুয়া হযরত আতা (রহঃ) কথার উপর গেড়ে বসে কাসেমী সাহেব প্রমান করার চেষ্ঠা করেছেন আমীন নিচু স্বরে বলতে হবে। কিন্ত বশীর হাসান কাসেমী সাহেবের মনের আশা পূর্ণ হলো না কারণ একটি মুর্খ ব্যাক্তি কুরআনের সুরা নিসা ৪/৪৩ আয়াতটির অর্ধেক পড়ে একটি মনগড়া ফতোয়া দিলো যে, স্বলাতের ধারে কাছেও যেও না। কিন্তু তার পরে আল্লাহ তাআলা বলেছেন যে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় স্বলাতের কাছেও এসো না। বশীর হাসান কাসেমী সাহেব হানাফীদের নামায বই-এর লেখক ঠিক তেমনই করেছেন। কারণ এটা ছাড়া আর তাদের কোন উপায় নেয়। তাদের মাযহাবে যে ফাটল ধরেছে। দেখুন নিরপেক্ষ পাঠন ভাই ও বোনেরা কেউ যদি আপনার বাড়ি থেকে একটি গরু চুরি করে আপনি তাকে কি বলে ডাকবেন। নিশ্চয় তাকে সাধু পুরুষ বলবেন না। তাকে চোর বা ডাকাত বলবেন। কেউ যদি জিজ্ঞেস করে কি চোর? তাহলে আপনি বলবেন, গরু চোর তাই নয় কী? এবার বলুন কেউ যদি একটি বড় হাদীস থেকে এক টুকরো চুরি করে দলীল নিয়ে মাসআলা প্রমান করার চেষ্ঠা করে তাকে কি চোর বলবেন? আমি তো তাকে হাদীস চোর বলবো। এবার দেখুন কাসেমী সাহেব হাদীস চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লো।

হযরত আতা (রহঃ) যে হাদীসে বলেছেন, আমীন একটি দুআ ঠিক তার পরে উক্ত হাদীসের মধ্যে বলেছেন দুআটি কিন্তু জোরে জোরে বলতে হবে। দেখুন মূল আরবী ইবারতটি-
عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ عَطَاءٍ قَالَ: قُلْتُ لَهُ: أَكَانَ ابْنُ الزُّبَيْرِ يُؤَمِّنُ عَلَى إِثْرِ أُمِّ الْقُرْآنِ؟ قَالَ: «نَعَمْ، وَيُؤَمِّنُ مَنْ وَرَاءَهُ حَتَّى أَنَّ لِلْمَسْجِدِ لَلَجَّةً»، ثُمَّ قَالَ: «إِنَّمَا آمِينَ دُعَاءٌ» وَكَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يَدْخُلُ الْمَسْجِدَ وَقَدْ قَامَ الْإِمَامُ قَبْلَهُ، فِيَقُولُ: «لَا تَسْبِقْنِي بِآمِينَ
অর্থঃ আতা (রহঃ) বলেন, ‘আমীন’ একটি দুয়া। ইবনে যুবাইর এবং তার পিছনে যারা স্বলাত পড়েছিলেন তারা এমন জোরে বললেন যে, মসজিদ কম্পিত হয়ে উঠল। (বুখারী হাঃ ৭৮০ এর অনুচ্ছেদ বা-১১১, বুখারী শরীফ, পৃষ্ঠা-১২০,১২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে ছাপা)

পাঠকগন এবার দেখলেন তো চোর কিভাবে ধরা পড়লো। বশীর হাসান কাসেমী হাসেব ভেবেছিল ফাঁকা মাঠে গোল দিবেন। কিন্তু তার আশা পূর্ণ হল না। অথচ তিনি হাদীস চোর সাব্যস্ত হল। কাসেমী সাহেবের চরিত্রটা ইয়াহুদী, খ্রীষ্টানদের মত কারণ তারা আল্লাহ (সুব) অহীর অর্ধেক বলতো আর অর্ধেক বাদ দিয়ে দিতো (সুরা মায়েদা ৫/১৫)। যেমন কাসেমী সাহেব আতা (রহঃ) এর হাদীসটির ব্যাপারে করেছেন।”

দ্বিতীয় জবাবঃ-পাঠকগণ কাসেমী সাহেব উদ্ধৃতি দিয়েছেন বুখারী বাব ১১১, হাদীসটি বুখারীতে থাকলেও ইমাম বুখারী (রহঃ) এর কোন সনদ বর্ণনা করেন নি। এই হাদীসটি মূলত যে কিতাবে আছে সেটা হল মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক হা/ ২৬৪০। এই হাদীসের মধ্যে একজন রাবী আছে ‘ইবনে যুরাইয়েয’ যিনি জীবনে ৯০ জন মেয়ের সঙ্গে মুতা বিবাহ করেছেন। (তাযকিরাতুল হুফফায ১/১২৮ পৃষ্ঠা)।
সুতরাং আবুল ইবনে যুরায়েয-এর উক্ত ঘটনা গ্রহনযোগ্য নয়। পাঠকগন এই উক্তিটি কিন্তু আমার নয় এই উক্তি করেছেন ‘হাদীস আহলে হাদীস হানাফী মাযহাব’ বই এর লেখক। শামসুর রহমান কাসেমী সাহেব তার বই-এর ৮৫ পৃষ্ঠায়।

নোটঃ দেখুন বশীর হাসান কাসেমী সাহেব আপনি আগে আপনার মাযহাবের আলেমদের অর্থাৎ শামসুর রহমান কাসেমী সাহেবের সঙ্গে বসুন মুনাযারা করতে, আপনি যে দলীল দিয়েছেন, ‘আমীন’ একটি দুআ এই হাদীসটি সহীহ না যঈফ তারপর আমাদের বিরুদ্ধে দলীল পেশ করবেন।”

“তৃতীয় জবাবঃ- কুরআনের আয়াত দুনিয়ার সবচেয়ে বেশী বুঝতেন, তিনি হচ্ছে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি অ সাল্লাম) কিন্তু রসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি অ সাল্লাম) এই আয়াত কুরআনে মজুত থাকতে দেখেও বহু দুআ জোরে জোরে পড়েছেন। সুরা ফাতেহা হচ্ছে সবচেয়ে বড় দুআ সেটা রসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি অ সাল্লাম) স্বলাতে জোরে জোরে পড়েছেন।”

“চতুর্থ জবাবঃ-পাঠকগণ বশীর হাসান কাসেমী সাহেব কুরআন হাদীসকে অপব্যাখ্য করে দলীল পেশ করেছেন। সেটি মূলতঃ তার মাযহাবের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। কারণ হানাফী মাযহাবের এমন কোন মসজিদ নেই যেখানে ফরজ স্বলাতের শেষে ইমাম সাহেব জোরে জোরে দুআ পড়েন না আর মুক্তাদী জোরে জোরে আমীন বলে না। এমন কি ধর্মীয় সভায়, খুৎবার সময় ও অন্যান্য সময় মাইকে সাউন্ড বক্স দিয়ে জোরে জোরে দুআ পড়া হয় আর জনসাধারণ জোরে জোরে আমীন বলরে থাকে। বলতে পারেন কাসেমী সাহেব সেই সময় কুরআনের ঐ আয়াতটি কোথায় থাকে।”

“পঞ্চম জবাবঃ-আমরা যদি ধরেই নিই “আমীন” দুআ আর এই দুআ মনে মনে পড়তে হবে। তাহলে বশীর হাসান কাসেমী সাহেব এবং শামসুর রহমান কাসেমী সাহেব পচা নর্দমায় পড়ে যাবে। কারণ বশীর হাসান কাসেমী সাহেবের লেখনীর মাধ্যমেই তারা যুক্তির খন্ডন হয়ে যায় দেখুন তার বই হানাফীদের নামায ১১৫ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, “সহীহ হাদীসে কলেমায়ে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” কে উত্তম দুআ বলা হয়েছে (সুনানে তিরমিযী, হা/৩৫৮৫, হাদীস সহীহ)।

প্রশ্নঃ বলুন তো কাসেমী সাহেব এই উত্তম দুআ কালেমায়ে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ উচ্চস্বরে বলা জায়েয না হারাম? আপনি যদি জায়েয বলেন, তাহলে আমাদের আমল সঠিক। আর যদি নাজায়েয বলেন, তাহলে জনসাধারণ আপনাকে উত্তম মাধ্যম দেবে।”

“ষষ্ঠ জবাবঃ-কাসেমি সাহেব যদি আমরা ধরেই নিই ‘আমীন’ শব্দটি একটি দুআ আর এই দুআটি অর্থাৎ ‘আমীন’ শব্দটি মনে মনে বলতে হবে। তাহলে এই হাদীসটির ব্যাপারে কি বলবেন।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَقِيَ الْمِنْبَرَ فَقَالَ: «آمِينَ، آمِينَ، آمِينَ» ، فَقِيلَ لَهُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا كُنْتَ تَصْنَعُ هَذَا فَقَالَ: ” قَالَ لِي جِبْرِيلُ: أَرْغَمَ اللَّهُ أَنْفَ عَبْدٍ – أَوْ بَعُدَ – دَخَلَ رَمَضَانَ فَلَمْ يُغْفَرْ لَهُ، فَقُلْتُ: آمِينَ، ثُمَّ قَالَ: رَغِمَ أَنْفُ عَبْدٍ – أَوْ بَعُدَ – أَدْرَكَ وَالِدَيْهِ أَوْ أَحَدَهُمَا لَمْ يُدْخِلْهُ الْجَنَّةَ، فَقُلْتُ: آمِينَ، ثُمَّ قَالَ: رَغِمَ أَنْفُ عَبْدٍ – أَوْ بَعُدَ – ذُكِرْتَ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْكَ، فَقُلْتُ: آمِينَ ”
আবু হুরাইরা (রাযি আল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত একদা নাবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে অ সাল্লাম)মিম্বরে উঠেই বললেনঃ আমীন, আমীন, আমীন! নাবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে অ সাল্লাম)কে বলা হলোঃ হে আল্লাহর রসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহে অ সাল্লাম! আপনি মিম্বারে উঠে আমীন, আমীন, আমীন বললেন। আপনি এমনটি বলার কারণ কি? তখন রসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহে অ সাল্লাম) বললেন-জিবরাইল (আলাইহিস সালাম) আমার কাছে এসে বললো, ধ্বংশ হোক ঐ ব্যাক্তি যে রমযান মাস পেলো কিন্তু তার গুনাহ ক্ষমা করা হল না এবং জাহান্নামে প্রবেশ করল। এমন ব্যাক্তিকে আল্লাহ তার রহমত থেকে বঞ্চিত করুন। তখন জিবরাই (আলাইহিস সালাম) বললেন, বলেন, আমীন। আর আমি বললাম, আমীন………(সংক্ষেপিত) (সহীহ ইবনু খুজাইমাহ, হা/১৮৮৮, ইবনু হিব্বান হা/৯০৪, হাদীসের শব্দাবলি তার, মুস্তাদরাক হাকমি হা/৭২৫৬, যাহাবীর তালিক্বহ সহ, সহীহ আত তারগীব হা/৯৯৫-৯৯৭, তালিকুল হাসসান আলা সহীহ ইবনে হিব্বান হা/৯০৪ বলেন এর সনদ হাসান, আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন)।

নোটঃ পাঠকগণ এই হাদীসটি কি এটা প্রমাণ করে না ‘আমীন’ এমন একটি দুআ যে দুআটি জোরে অর্থাৎ উচ্চস্বরে বলা সুন্নাত। কারণ, রসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহে অ সাল্লাম) উচ্চস্বরে আমীন বলেছিল বলেই তো সাহাবী (রাযি আল্লাহু আনহু) রসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহে অ সাল্লাম)কে প্রশ্ন করেছিল । আমি বলতে চাই আমীন উচ্চস্বরে বলায় সুন্নাত আর মনে মনে বলা বা নিম্নস্বরে বলা সুন্নাতের পরিপন্থী (আল্লাহ কাসেমি সাহেবকে হক বুঝার তাওফিক দান করুন-আমীন)”
  • 919.jpg
    919.jpg
    27.3 KB · Views: 2
Author
Admin
Downloads
0
Views
14
First release
Last update

Ratings

0.00 star(s) 0 ratings

More resources from Admin

Back
Top